Monday 29 December 2014

পথের অজান্তে Pather ajante

এক”      

বাস থেকে নেমেই শাহবাগের মোড়টা পার হল অরণ্য ।ফুলের দোকান গুলোর পাশ ধরে আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগল । হরেক রকমের ফুলগুলোদেখতে তার কেন জানি একটা আলাদা ভাল লাগা কাজ করে । খুব ক্লান্ত লাগছে !রিক্সায় চাপলে ভাল হতো । কিন্তু কি আর করা ! মাসের শেষ ।

পকেটে অল্প কিছুটাকা । এ মুহূর্তে রিক্সায় চাপাটা তার জন্য গরীবের ঘোড়ারোগ তুল্য । উপায় নাদেখে হাঁটতেই থাকল । হাঁটতে হাঁটতে টিএসসি’র কাছাকাছি এল সে ।

Sunday 28 December 2014

ছয়টি তারে লুকিয়ে আছে Chhoyti tare lukiye aachhe

১.
সারাদিন ক্লাস,ল্যাব,টিউটোরিয়াল তারপর বিকেল বেলা গিটার শিখতে যাওয়া, ফিরে এসে ফ্রেশ হয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া আর ফিরে এসে রাতে আবার গিটার নিয়ে বসা। এভাবেই গত ১ মাস ধরে ব্যাস্ত সময় কাটে ফাহমির। ইতিমধ্যেই মিসেস রহমান ভীষণ বিরক্ত হয়ে গেছেন সবসময় গিটার এর টুংটাং শুনতে শুনতে।

Saturday 27 December 2014

বৃষ্টিতে মন ভিজে যাক Bristite mon vije jak

১.
প্রায় বেশ কিছুদিন ধরেই শুন্যর ঠোঁটের কোণে চিরচেনা সেই পরিচিত হাসি দেখা যায় না। হাসি ব্যাপারটা কেমন জানি অপরিচিত এখন তার কাছে। ছোট থেকে ছোট জিনিসের মাঝে সুখ খুঁজে নেওয়া শুন্য এখন যেন অন্য জগতের বাসিন্দা। অসম্ভব রকমের স্বপ্নবিলাসী এই তরুনের রঙিন চোখ দুটো প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্বপ্ন বোনায় ব্যস্ত থাকত। হটাৎ চারপাশ থেকে হতাশার মেঘ এসে তার স্বপ্নিল আকাশটাকে ঢেকে দিয়েছে,সেটা তার চোখজোড়া দেখলেই বোঝা যায়। শুন্যর এমন নিরাশ অভিব্যাক্তি তার চারপাশের পরিচিত মানুষদের কাছে খুব অচেনা।

Friday 26 December 2014

বৃষ্টি পায়ে পায়ে Bristir paye paye

পাখির কিচিরমিচির শব্দে সকালের ঘুম ভাঙ্গে অধরার। শহরের ইট-পাথরের বড় বড় দালানকোঠার ভিড়ে সকালবেলা পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা অনেকটা আকাশকুসুম কল্পনা করার মত একটা ব্যাপার। অধরার বাবা সরকারি চাকুরী করেন সেই সুবাদে সরকারি একটি দোতলা বাংলোতে থাকে অধরারা। বাসার চারপাশ গাছগাছালিতে পরিপূর্ণ। তাই ভোরবেলা পাখির কিচিরমিচির এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ঘুম থেকে উঠেই দক্ষিণের জানালাটা খুলে দেয় অধরা। ভোরের আলো আর শীতল বাতাস ছুঁয়ে যায় অধরাকে।

Thursday 25 December 2014

তুলতুলের এডভেঞ্চার Tultuler Adventure

একমনে গোল একুরিয়ামটায় রাখা ছোট্ট গোল্ডফিসটার ছোটাছুটি দেখছে তুলতুল। মনটা ভীষণ খারাপ ছোট্ট তুলতুলের আর তাই কিছুই করতে ইচ্ছে হচ্ছে না ওর। এজন্য কিছুক্ষণ পর পর ড্রয়িংরুমে এসে সে গোল্ডফিসটা দেখছে। মাছটা খুব প্রিয় ওর,গত জন্মদিনে বাবা উপহার দিয়েছিলো ওকে। তুলতুলের সাথে মিলিয়ে নাম ও দিয়েছিলো একটা “চুলবুল”। বাবা টা ভীষণ দুষ্ট,আপনমনে বলতে বলতে হেসে উঠে তুলতুল। একটু পরেই আবার মন খারাপ করে মুখটা গম্ভীর করে ফেলে। আর মাত্র তিন দিন পরেই ওর জন্মদিন।
পাক্কা পাঁচ বছরে পা দিবে ছোট্ট তুলতুল। অথচ মা বাবার সাথে ঝগড়া করে তুলতুলকে নিয়ে দাদু বাড়ি চলে এসেছে। বাবা আর মাকে এ সময়টাতেই কেন এমন ভয়াভয় ঝগড়া টা করতে হল তা ভেবে কোনো কূলকিনারা পায় না তুলতুল।

Wednesday 24 December 2014

ভিনদেশী তারাদের দেশে Vindeshi tarader deshe

--- টিং ডি টিং......... হ্যাপি বার্থডে আমার সুইটু মুইটু অরোরা। দেখো মামনি তোমার জন্য মা কি বানিয়ে এনেছে!
--- কই দেখি দেখি? কেক! থ্যাঙ্কু ম্যাঙ্কু মা। তুমি বেসটু মা।
--- হুম হুম হয়েছে। আর আহ্লাদ করতে হবে না, আয় কেকটা কাটি।
মা-মেয়ে দুইজনে মিলে কেকটা কাটল। তারপর দুইজন মিলে কেক খাওয়ার চেয়ে মাখামাখি করলো বেশি। সেই ছোট থেকেই অরোরার সাথে মায়ের এমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বাইরে থেকে সারাদিনের হৈ হুল্লোড় শুনলে মনেই হবে না দুই রুমের এই বাসায় মানুষ বলতে শুধু এই দুইজন। অরোরা আর তার মা কথা। অরোরার বাবা ক্যান্সারে মারা গেছে অরোরার জন্মের আগেই।

Tuesday 23 December 2014

বুকের গভীরে কার যেন ডাক আসে

মনের সাথে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা দন্ধ করলো সত্য। একটু পরেই তার অসমাপ্ত জীবনের সমাপ্তি হবে। তাই মার কাছে শেষ চিঠিটা লিখতে বসলো সে। তার অসমাপ্ত জীবনের শেষ চিঠি।*****************************************************************************************************************************

জানো মা,

Monday 22 December 2014

এভাবেই হয়তো আবার গল্পের শুরু

একটি চেরি গাছের সদ্য গজানো পাতা, যার রঙটা এখনও পুরোপুরি লাল হয়নি। অনেকগুলো লাল রঙের পাতার ভিড়ে সদ্য গজানো হলুদ রঙের ছোট্ট পাতাটি বেশ নজর কাড়ছিল। চারদিকের সবুজের মাঝে লাল রঙের গাছটি অদ্ভুত সৌন্দর্যের আবরণ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেককাল ধরে। বৃদ্ধ পাতারা ঝরে পড়ে তবুও গাছটি ঠিক দাঁড়িয়ে থাকে নিজের স্বত্বা নিয়ে। হারানোর ব্যথা তো মানুষও সময়ের সাথে সাথে ভুলে যায়, একটা গাছ তো সেখানে নস্যি।

Sunday 21 December 2014

অনন্য অপরাজিতা Ananya Aparajita

রাত ৩টা...খটখট করে যখন আমি ল্যাপীর কীবোর্ডে ঝড় তুলছি একরকম....ঠিক তখনি মাথার উপর একটা ঠান্ডা হাতের ছোঁয়া...
-কিরে ঘুমাবি না...???কি এতো কাজ করিস সারা রাত ধরে...।আমার ভাল্লাগে না,তোর জন্য আমিও সারা রাত ঘুমাতে পারি না ভেবে যে তুই ঘুমাস না...।
-মা...আমি কি বাচ্চা মেয়েটা আছি....বলতে পারো একটা বড়সড় মাল্টিন্যাশনাল কম্পানীতে জব করি...কাজ তো করতেই হবে তাই না...না হলে শুধু শুধু কি আর আমাকে টাকা গুলো দেবে বলো...যাও তুমি ঘুমাওগে...আমি এইতো আর ১০ মিনিট..।
মা আমাকে ছোট্ট করে আদর দিয়ে যায় আর বলে....
-যা ভালো মনে হয় কর তুই...কখোনো মানা শুনছিস তুই...???
মনে পড়ে যায় আজ থেকে ৪ বছর আগের কথা...বাবা আমাকে বলেছিলো..

Saturday 20 December 2014

রাজামশায় আর তিনটি গ্যাস বেলুন

-আপনি এইদিকে আসেন

-না না আপনি এইদিকে আসেন

-ধুর ওনার কাছে কি আমার কাছে আসেন....

এই বলিয়া টানাটানি শুরু করিয়া দিলো আমাকে তিন ডাঃ বাবু....আর আমি মাধখানে আমসত্ব হইয়া গেলাম...আপনি কিছু একটা করেন রাজামশায়...

রিনির দুঃস্বপ্ন

আজ শুক্রবার,আমি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশট্রেশ হয়েই আয়নার সামনে বসে গেলাম সাজুগুজু করার জন্য...।আজ আমার পালিয়ে করা বিয়ে...মানে একটু পর আমি পালাবো...।মায়ের কাছ থেকে গতো রাতে বান্ধবীর জন্মদিন বলে একটা শাড়ি নিয়ে রেখেছিলাম।সবাই লাল শাড়ি পরে বিয়ে করে কিন্তু আমি একটা সবুজ শাড়ি চেয়ে নিলাম মায়ের কাছ থেকে যেনো কোনো সন্দেহ না করে...।
সাজুগুজুতে আমার আবার হাত খুব পটু...মাঝে মাজেই বউ টউ সাজাই বিয়েতে তাই নিজের সাজতে খুব একটা দেরি হলো না...।ধুমধাম করে হালকা একটু সেজে চুলে বেলি ফুলের তোড়াটা গুঁজে দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম মা’কে বলে...।ওর আবার বেলী খুব পছন্দ কিনা তাই...

Wednesday 17 December 2014

পার্থক্য Parthakya ( Bangla Misti Golpo )

ক্লাশের সবার গল্পের মাঝে আমি আমার সবর্কালের বোঁচা নাক নিয়ে সেটা আবার বিগলিতো করার মহৎ উদ্দ্যেশ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করলাম।
-কিরে আজ কি নিয়ে গল্প হচ্ছে শুনি???
-এখোনো কিছু জমেনিরে। তুই না আসলে জমে কি করে???
-হুমম সাধু সাধু...।এইবার জমবে মামা,জমে ক্ষীর হবে বুঝলি।
আমরা বন্ধুরা মিলে এবার জম্পেশ আড্ডা শুরু করলাম,বিষয় বস্তু ছিলো কোন মেয়ের জামা দিন দিন সাইজে ছোটো হয়ে কয়েকদিন পর জামার কাপড় ব্যাবসায়ীর ভাত মারবে,কোন ছেলের বাম পায়ের মোজাটা ছেড়া,আর ক্লাশের মাঝে কে কাকে আই লাবু লিখে চিরকুট পাঠায়...।

Tuesday 16 December 2014

একটি সড়কীয় ক্রাশ খাওয়া প্রেম Sarokiy prem

বাসে উঠতে যাবো,ঠিক সেই মূহুর্তে মা বললো তনু তোর বাবা কই???আমার দু চোখ বাবা কে খুজে ফেরে,আমি আতকিংত আমার বাস ছেড়ে দিলে বাবার সাথে দেখা হবে না এটা ভেবে...।সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে বাবা আমার পাশে এসে দাড়ালো...।
-বাবা কোথায় ছিলা?
-এইতো ওই ছেলেটার সাথে কথা বলতে গেসিলাম।
-কোন ছেলেটা...???
-ওই যে সুন্দর করে ছেলেটা...।
সুন্দর করে হোক আর যে কারনেই হোক আমি পিছন ফিরে ছেলেটার দিকে তাকাই...।সত্যিই “সুন্দর করে” কথাটা তার জন্য উপযুক্ত...।

Monday 15 December 2014

আমার চিলেকোঠা Amar Chilekotha

আমাকে যখন পিঁড়িতে করে নামানো হলো ঘর থেকে আমার দাদা কানের কাছে ফিসফিস করে বলছিলো,কিরে জানিস না একদিন আমাদেরই তোকে তুলে নামাতে হবে,এতো ওজন কেন বাড়িয়েছিস....নিজের কথা না হয় না ভাবলি একবার আমাদের কথা তো ভাবতে পারতি...।
এই আমার ছাদনাতলায় আগমন।বুক ভরা চাপা কষ্টের মাঝেও আমি ফিক করে হেসে ফেলি আর সর্ন্তপনে দাদার মুখের দিকে তাকাই...ভাইটার আমার মুখটার দিকে তাকানো যাচ্ছে না;নিজে স্বাভাবিক থাকা আর আমাকে স্বাভাবিক রাখার জন্য যে এই তিক্ত রসিকতা সেটা ওর মুখ দেখেই বুঝতে পারছিলাম।

Sunday 14 December 2014

নীল খামে কাব্য Nil khame kabya

ফিলটারে শেষ টানটা দিয়ে ছুড়ে ফেলে হাটা শুরু করে অলক।
- এই যে শোনেন
- হু
- আপনাদের মতো মানুষের জন্যই তো এতো প্রবলেম আমাদের দেশে।
- কি? মানে কি?
কি অসহ্য উথাল পাথাল করা চোখ মেয়েটার, কথা গুলো বলতে বলতে চিন্তা করে সে।

Saturday 13 December 2014

বেচারা Bechara

রিয়া একদৃষ্টিতে ওর বামহাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলির দিকে তাকিয়ে আছে। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে । এক ফোঁটা দুফোঁটা রক্ত ঝরে পড়ছে ওর কোলের ওপর। সেই কতক্ষন ধরে যাঁতির ভেতর হাত ঢুকিয়ে আঙ্গুল কেটে রক্ত বের করার চেষ্টা করছে ও। এতক্ষন চেষ্টার পর অবশেষে দুই তিনফোটা রক্ত বেরুল কনিষ্ঠাঙ্গুলি কেটে । আহা নরম পুষ্পকলির মত আঙ্গুলগুলো এখন প্রচন্ড ব্যথায় নীল হয়ে আছে!
ঘটনা অতি সাধারন । সন্ধ্যায় বাম হাতের উল্টা পিঠ দিয়ে সে তার প্রানপ্রিয় স্বামী ফয়সালের ডান গালে থাপ্পড় মেরেছে । বেচারা কাঁদো কাঁদো মুখ করে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে পাশের ফ্ল্যাটে চলে গেছে।
এরপর কয়েক হাজার বার ফোন দেয়া হয়েছে।

Friday 12 December 2014

সমাপ্তির গল্প Samaptir Golpo

দশ মাস পর দেশে ফিরেছে রায়হান । পিএইচডি কমপ্লিট করতে আরো এক বছর লাগবে ওর । বাসায় এসে রীতিমত লজ্জায় পড়ে গেছে । নতুন বাবা হয়েছে । ছেলের জন্য হাবিজাবি কিনে এনেছে । আর সবার জন্য কেনাকাটা করার সময় হয়ে ওঠেনি । এখন বড় আপা দুলাভাই আর ভাবী ওকে মাস্ট খেপাবে । পার্টটাইম জব করে নিজের খরচ থেকে বাঁচিয়ে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়না রায়হানের। আইরিন নিজে একটা স্কুলে চাকরি করে হাত খরচটা মেটায় ।

Thursday 11 December 2014

মাঝরাতের প্যাসেঞ্জার Majh rater passanger

রাস্তাটা এবড়োখেবড়ো ।
রিকশাওয়ালা উল্কার বেগে রিকশা চালানোর প্রতিজ্ঞা নিয়েছে সম্ভবত । সাজ্জাদ ঝাঁকুনি খেতে খেতে ভাবছিল বাড়ি পৌঁছানোর আগে গায়ের হাড়গোড় আস্ত থাকলে হয় !
রাত বাজে আড়াইটা । এত রাতে রিকশার প্রতিটা ঝাঁকুনি যে পরিমান বিকট শব্দ তৈরি করছে তা আর কিছুক্ষন চলতে থাকলে গাঁয়ের লোকজন ঘুম ভেঙ্গে উঠে আসবে লাঠি সোটা নিয়ে ।
এক পাশে ছোট একটা খাল অন্য পাশে ধানী জমি ।

Wednesday 10 December 2014

অভিসপ্ত গাড়ি Avisapta Gari

তখন চলতে ছিল আষাঢ় মাস। আষাঢ় মাস ভ্রমনের জন্য মোটেও সুবিধার নয়। যখন তখন বৃষ্টির ফলে রাস্তা-ঘাট কাদায় সয়লাব হয়ে থাকে। তারপরও আমাকে যেতে হয়েছিল। কথা ছিল ভ্রমন সংঙ্গি হিসাবে আমার বাল্যবন্ধু ইমরান থাকবে। কিন্তু যাবার আগের দিন ইমরান আমাকে চৌধুরী সাহেবের বাড়ি যাবার বিস্তারিত ঠিকানাটা হাতে ধরিয়ে দিল। করুন গলায় বললো, দোস্ত প্লিজ তুই একা গিয়ে ঘুরে আয়। আমার অফিসের জরুরী কাজে আমাকে চট্রগ্রাম যেতে হবে। কণে তোর পছন্দ হলে পরের বার আমি আর তুই যাব।
ওর এমন অনায্য দাবী শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম।

একটি ভূতের গল্প Eti Ekti Bhooter Galpo

প্রায় একমাস ছুটি কাটিয়ে কলেজে পৌঁছাবার পর রাতেরবেলা আমাদের গল্প যেন আর ফুরাতেই চাইতোনা! একেজনের পেটে কত কথা! কার চুল কতো সে.মি বড় হলো এই ব্যপারে নিরীক্ষামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন থেকে শুরু করে ছুটিতে টিভিতে দেখে আসা বিজ্ঞাপনের মডেলদের অঙ্গভঙ্গি অনুকরণ- নানারকম আলোচনায় গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকি আমরা। সেবারও ব্যতিক্রম হয়নি, ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র বের করে লকারে গুছিয়ে রাখতে রাখতে অনর্গল বকে যাচ্ছি। তখনই মৌসুমি ব্যাগ থেকে একটা কি যেন ক্রিমের টিউব বের করে আমাদের সবাইকে দেখিয়ে সেটার গুণকীর্তন করতে লাগলো, এইটা মাখলে নাকি একমাসের মধ্যে বিশিষ্ট অভিনেতা হাসান মাসুদও টম ক্রুজের মতো হয়ে যাবেন!  ওর কথা শুনে মাইকেল জ্যাকসনের জন্য মনটা হু হু করে কেঁদে উঠলো। আহারে বেচারা, খামোকাই বারবার প্লাস্টিক সার্জারি করতে গিয়ে মরলেন। তাম্মি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো এইরকম একটা

Tuesday 9 December 2014

স্মৃতি কথন

'এভাবে আমাকে কাঁদাও কেনো?'
সেদিন আমি ফুঁপিয়ে কাঁদছিলাম তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে। কি এক প্রসন্ন হাসি হেসে তুমি আমার চুলে মুখ ডুবালে। আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলেছিলে 'ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি। এক মহাকাশ সমান, এক মহাসমুদ্র সমান। তুমি আমার, একান্ত আমার। শুধুই আমার'

এই বালক........এই!!!

(১)
বালকটিকে প্রথম খেয়াল করলাম ক্লাসে। একমনে পেন্সিল চিবুচ্ছিল। ভঙ্গীমা দেখে মনে হলো, পেন্সিল চিবুনোর উপর বুঝি নির্ভর করছে ওর জীবণ-মরণ! বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে গেলো। এই ছাগল কিনা আমার বায়োলোজি প্র্যাকটিকেলের পার্টনার! একটা সেরা অকর্মা। ছাত্র ভাল, হাতের লেখা আর বিচার-বুদ্ধি ও মোটামুটি মানের। তাই তাকে পার্টনার করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলাম। আর এখন ইচ্ছে করছে তার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানাই। কিংবা হাড্ডি দিয়ে ঝুনঝুনি! তাতে যদি কিছুটা রাগ কমে আমার। চোখ বড় বড় শ্বাস নিলাম। রাগ নিয়ণ্ত্রন করতে চাইছি আসলে। চোখ খুলে দেখলাম, সে এখনও নীরিহ পেন্সিলের রস আস্বাদনে ব্যস্ত! আর পারলামনা নিজেকে সামলাতে।

Monday 8 December 2014

আজ যে ভীম একাদশী

গোপাল একাদশী করত। তার একাদশী করা অভ্যাস। গোপাল একাদশীর দিন সন্ধ্যেবেলায় প্রসাদ পেত লুচি, মিষ্টি- নানাবিধ ফল সহকারে। সেদিন যেন মহোৎসব লেগে যেত। গোপালকে ওভাবে একাদশীর দিন ভোজন করতে দেখে তার এক চাকর বললে, সামনের তারিখ থেকে আমিও একাদশী পালন করব বাবু। আমার একাদশী করার খুব ইচ্ছে। আপনি যদি আদেশ দেন আমি একাদশী করি। আমার খুব ইচ্ছা।গোপাল মুচকি হেসে বলল, খুবই ভাল কথা, এই তো চাই। একাদশী করা সকলের উচিৎ। দেহের উপকার, তার সাথেই মনেরও সাত্ত্বিকভাব সাধনের জন্য একাদশী সকলের করা উচিত।

হিসাবী লোক

গোপাল একবার দূর দেশে বেড়াতে যাবে বহুদিন ভাড়াটে বাড়িতে রয়েছে, একে একে অনেক আসবাবপত্র জমা হয়েছে। সে সব আসবাব সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব, অথচ বেচে যেতেই ইচ্ছে নেই। হেকে পয়সা পাবে। বেচে গেলে টাকা পয়সা যা পাওয়া যাবে এখন, তাতে ফিরে এলে সে টাকায় তো আর খরিদ করা যাবে না, ভালো ভালো আসবাবপত্র প্রায় সব গোপাল সকলের কাছ থেকে দান হিসাবে পেয়েছে তা তো বেচা উচিত নয়। তাহলে লোক কি বলবে? তাই কি করা যায় এ কথাই বার বার ভাবছে। আবার আসবাবপত্র রেখে যাওয়ার জন্যে ওই ভাড়া বাড়িটা বজায় রাখার কোনো মানে হয় না। কারণ অনেক টাকা ভাড়া গুনতে হবে। ভেবে ভেবে অবশেষে একটা ফন্দী বের করলে। গোপাল একটা বড় বন্ধকী দোকানে

জাত-কুল সব গেল

গোপালের স্ত্রী নিজেই দেখাশোনা করে বড় মেয়েকে এক বামুনের বাড়িতে বিয়ে দিয়েছিল। সেই মেয়ের মেয়ে বড় হোল একদিন। তারই বিয়ের নিমন্তন্নে গোপালেরা উপস্থিত। স্ত্রী একান্তে ডেকে বললে, হ্যাঁ গা, আমাদের বড় মেয়ের জামাই নাকি জাতে নাপিত বামুন নয়। কিন্তু সে সম্বন্ধ তুমি কিছু জান কি?
স্ত্রীর কথা শুনে গোপাল বললে, আর চেপে যাও- আমিও আসলে বামুন নই, আমি জাতিতে নাপিত। তোমার বাপের কাছে জাত ভাঁড়িয়ে তোমাকে বিয়ে করেছি। তুমি জাতকুল হারালেও আমি মোটেই জাতকুল হারাইনি। জাতকুল আবার কি? ধন মানেই সব।

ধরে আনতে বেঁধে আনা

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র একবার পেয়াদাকে ডেকে বললেন, ওরে ভজহরি ব্যাপারীকে একবার ডেকে আনবি তো। ভজহরি সরেস গুড়ের কারবার করত। পেয়াদা ব্যাপারীকে একেবারে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাজসভায় হাজির করলে। ভজহরি গোপালকে ধারে মাল দিতে চাইত না, তাই তার ওপর গোপাল চটে ছিল। পেয়াদা তাকে আজ একেবারে রাজসভায় বেঁধে এনেছে বলে গোপাল মনে মনে বেশ খুশিই হল। বলল,- বেশ হয়েছে শালাকে বেধেই এনেছে।
রাজা কিন্তু পেয়াদার ওপর চটে গিয়ে বললেন, আমি ভজহরিকে ডেকে আনতে বললুম, আর তুই কিনা একেবারে বেধে নিয়ে এলি?

Sunday 7 December 2014

বুদ্ধু বালক,চন্দ্রমানবী আর একটা লিস্ট

(১) "এই যে,নাও!" বলেই সুজানা আবীরের হাতে একটুকরা কাগজ ধরিয়ে দিল। আবীর বরাবরই মাঝারী স্বভাবের ছেলে। খুব বেশী সাহসী যেমন নয়,তেমনি ভীতু ও নয়। তবু সুজানা নামক এই অদ্ভুত সুন্দরী,ঝাড়িবাজ মেয়েটার সামনে আসলে ওর হাঁটুদ্বয় জোর পায়না। নিয়ণ্ত্রনহীন ঐচ্ছিক পেশী বনে যায়। আর বারবার পেছন ফিরে দৌড় প্রতিযোগীতায় নামার ইচ্ছে পোষণ করে!

Saturday 6 December 2014

সর্দি মোছার পাছা

সেদিন বড় গঞ্জের হাটবার। সকলকে সেই হাটেবাজার করতে যেতে হয়। গোপাল গঞ্জের বাজারে চলেছে গ্রামের কয়েকজন চেনাজানা লোকের সঙ্গে গল্প করতে করতে। যেতে যেতে হঠাৎ গোপালের নজরে পড়ে, সামনে একটি মেয়েও যাচ্ছে বোঝা মাথায় নিয়ে। গোপাল ভালভাবে নজর দিয়ে দেখতে পেলে, মেয়েটি ভারি বোঝার জন্য হোক বা অন্য কোনও কারণে হোক কাঁদতে কাঁদতে আগে আগে চলেছে, আর ঘন ঘন একটা হাত দিয়ে সর্দি মুছছে পাছায় ঘষছে আনমনে। কাঁদলে সকলেরই নাকি সর্দি আসে এমনিতেই। সে একহাতে বোঝার টাল সামলাচ্ছে, আর এক হাত দিয়ে নাকের সর্দি টেনে পাছার মুছছে। আর এ অভ্যাসটাতো অল্প বিস্তর অনেকেরই থাকে, এ আর তাই তেমন নতুন কি?

মোসায়েবি সোজা নয় Mosayebi soja nai

খতেগঞ্জের এক জমিদার, তাঁর বড় সখ, গোপাল ভাঁড়ের মত তার সভাতেও এমনই একটি ভাঁড় রাখেন। কিন্তু মনে মত ভাঁড় আর তিনি পান না। একদিন গোপালকে ডেকে বললেন, বাপু গোপাল। তুমিই একটা লোক আমায় বাজিয়ে দেখে দাও- যেন মোটামটি তোমার মত হয়। গোপাল রাজী হয়ে বললে, তা বেশ। এ কাজের জন্য ঢ্যাড়া দিয়ে দিন, আমি তার মধ্যে থেকে উচিত লোক বাছাই করে দেব। বিজ্ঞপ্তি শুনে ভাঁড়ের কাজের জন্য উমেদার হয়ে অনেকেই এল। গোপাল তাদের অনেককে পরীক্ষা করতে লাগল কিন্তু কেউই পারল না। গোপালের ধাঁধার ঠিকমত জবাব না দিতে পে কেউ কেউ বাতিল হয়ে অনেকেই আবার গোপালের নাম শুনেই বে ইজ্জতির ভয়ে আগেই পিছুটান দিল।

গাছে কাঁঠাল গোফে তেল Gopal BHarer Galpo

গোপালের পাশের এক প্রতিবেশীর নাম কেদার। তার বাড়ির উঠানে কাঁঠাল গাছ ছিল। গাছটিতে প্রতি বছর বেশ বড় বড় কাঁঠাল হত। খেতে মধুর মত মিষ্টি। কিন্তু একটা কাঁঠালও সে কাউকে দিত না। গাছে একটি কাঠাঁল পাকলে তার গন্ধে পাড়া মাত করে তুলত। গোপাল যাচ্ছিল কেদারের বাড়ির সামনের রাস্তাদিয়ে। যেতে যেতে দেখলে কেদার দাওয়ায় বসে একবাটি সরষের তেল নিয়ে গোঁফে, বেশ করে মাখাচ্ছে। তাই দেখে গোপাল জিজ্ঞাসা করলে, কি হচ্ছে কেদার ভায়া।
কেদার বললে, গাছের বড় কাঠাঁলটা পাকবে মনে হচ্ছে তাই

Friday 5 December 2014

নবাবের অষ্টাদশ-পর্ব মহাভারত কথা Gopal Varer Galpoi

একবার মুর্শিদাবাদের নবাবের খেয়াল হল, হিন্দুদের মত আমাকে নিয়ে মহাভারত রচিত হোক। যেমনি ভারা তেমনি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের কাছে নির্দেশ পাঠালেন, আপনাদের অর্থাৎ হিন্দুদের অনুকরণে, তাকে নিয়ে একটি নতুন মহাভারত পন্ডিতদের দিয়ে লিখে দিতে হবে একমাসের মধ্যে। সেইরূপ পন্ডিত অতি শীঘ্র নবাব দরবা পাঠান। যিনি রচনা করবেন তাঁকে প্রচুর ‍আসরাফি পুরষ্কার দেওয়া হবে।নবাবের চিঠি পেয়ে মহারাজ এমন চিন্তায় পড়লেন যে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিলেন। কারণ এমন কে পন্ডিত আছে যে, সে হিন্দুদের মত করে মহাভারত লিখে দিতে সক্ষম হবে।

চোরের আজব সাজা Gopal Bharer Galpo

একদিন গোপালের জ্বর হওয়ায় সে সেদিন রাজসভায় যেতে পারেনি। মহারাজ সভাসদদের নিয়ে নানা আলাপ আলোচনা করতে করতে হঠাৎ বললেন, আমার সভার মধ্যে এমন কি কেউ আছে, যে গোপালের ঘর থেকে কিছু চুরি করে আনতে পারে? যদি কেউ পারে, তবে সে সামান্য জিনিস হলেও আমি তাকে বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করব।
তোমরা কেউ রাজী থাকলে বল।মহারাজের পুরষ্কার লোভেও কেউ রাজি হল না গোপালের ঘরে চুরি করতে। কারণ বড় চতুর সে।

Wednesday 3 December 2014

রাহাপ্পু Rahappu

(১)
"রাহাপ্পুউউউউউউউউ!" সুজানা ভয়ে ভয়ে ডাকছে। রাহানুমা রাগী চোখে তাকালো। "কী হয়েছে?" "আমি ঘুমাবোতো!" "মানা করেছে কে?" "তুমি আসোনা,খাটে বস।" "কেন?তুই ঘুমাতে আমার খাটে বসতে হবে কেন?" বলেই রাহানুমা খাটে এসে বসে। সুজানা এগিয়ে বোনের কোলে মাথা রাখে। তার শিশুসুলভ ভঙ্গীমায় রাহানুমার রাগ পড়ে যায়।"সোনা,তুই এমন করিস কেন? সামির মাথাটা কেন ফাটিয়েছিস?" "ঐ বদ পোলাটা তোমাকে রাহাপ্পু বলেছে!" "ওতো ছোট আমার,তাই আপ্পু বলেছে!" "অন্য কিছু ডাকুক। রাহাপ্পুতো আমার দেয়া নাম!" সুজানা ছোট্ট দুই হাতে বোনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

Tuesday 2 December 2014

বন্ধ দরজা Bandh Daroja

(১) দুপুর বারোটা। ঠিক মধ্যদুপুর। অদ্ভুত কোন কারণে তখন আকাশটা আয়নার মত হয়ে যায়। আর সে আয়নায় প্রতিফলিত হয় সূর্যের যত ক্রোধ। কাঠফাটা রোদ বলে একটা কথা প্রচলিত আছে,যে রোদে কিনা কাঠ ফাটে। কিন্তু আজকের রোদটাকে বলা যায় লোহাগলা রোদ। এ রোদে লোহা গলবে। তাছাড়া গ্রীষ্মকালের মধ্যদুপুরের আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। চারপাশে যেমন বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে,মরিচীকার জন্ম দেয়। তেমনি ভাবনাগুলো ও উল্টে পাল্টে যেতে থাকে।

Saturday 29 November 2014

শৈল্পী [ Shilpir Galpo ]

 (১)

"আর কদ্দিন রে শুভ্র? তোর মত একটা জিনিয়াস যদি........" হতাশার তোড়ে তৃপ্তির কথা আটকে যায়। শুভ্র হেসে ফেলে বান্ধবীর অবস্থা দেখে। তার সামনে একটা পোর্টেট। তৃপ্তির দিকে তা ফিরিয়ে বলে,"দেখতো এবার।"
"ওয়াও!!!" তৃপ্তি চেঁচিয়ে ওঠে হটাত! "এটা আমি? সত্যি আমি? আমি এত্ত মায়াবতী?"
"মিথ্যে মিথ্যে ফুটিয়ে তুললাম আর কি!"
খোঁচাটা এড়িয়ে তৃপ্তি বলল,"নিয়ে যাই? বাঁধিয়ে ঝুলিয়ে রাখব বসার ঘরে। পিক তুলে ফেবুতে ও দিব। লোকে ডাকবে,"তৃপ্তি দ্য মায়াবতী।" আহ ভাবতে ও আবেগাপ্লুত হয়ে যাচ্ছি। নিই?"

লেইম লাভার ( Misti Premer Galpo )

নীল আকাশের নিচে আমি রাস্তায় চলেছি একা- সেই আদি আমলের গানটা গাইতে গাইতে আপন মনে হাঁটছিলাম ! হঠাত্‍ বজ্রাহত হলাম !
না, ভুল ভাবছেন । ঢাকা শহরের অগণিত ম্যানহোল গুলোর মাঝে একটি আমাকে আপন ভেবে কাছে টেনে নেয় নি ! আপন মনে হাঁটলেও আমি যথেষ্ট সতর্ক ভাবেই হাঁটি ।
স্তম্ভিত হলাম কারণ ছোটকাল থেকে যেরকম রাজকুমারীর ছবি আমার মানসপটে লালন করে এসেছি ঠিক তার এক বাস্তবরূপই রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে । চোখে মুখে বিচলতি ভাব । কি যেন খুঁজছে !
"পাইলাম ! আমি ইহারে পাইলাম !!" চারপাশের এত লোকজন, গাড়ি-ঘোড়া, বিল্ডিং সব হঠাত্‍ অদৃশ্য হয়ে আমি নিজেকে অবারিত সবুজের মাঝে আবিস্কার করলাম !

Thursday 27 November 2014

ছায়াশরীরি মা

শাওনীর ডায়রি থেকে ::

আমরা মানুষরা ক্ষণস্থায়ী। এই আছি তো, এই নাই! কেও মারা গেলে ধীরে ধীরে তার স্মৃতিটুকু ও মুছে যায়। অথচ মৃত মানুষটাকিন্তু পুরোপুরি হারিয়ে যায়না ! কোথাও না কোথাও থেকে যায়। হয়ত অন্য কোনরূপে, কিংবা অন্য কোন মাত্রায় ! কোন এক অতৃপ্ত আশা পূরণের অপেক্ষায়..মৃত্যুর পরে আরেক জীবন আছে, আমরা জানি। আর আমি জানি, সবচাইতে আপন, প্রিয়মানুষগুলোর দ্বিতীয় জীবন হচ্ছে আমাদের অনুভূতি। তারা আমাদের অনুভূতিতে মিশে থাকে। আমাদের বিশ্বাস আর অস্তিত্বে মেশে থাকে। যার সাক্ষী আমি..!!! কিছুদিন আগের ঘটনাই ধরুন...

Wednesday 19 November 2014

যতসব ভৌতিকতা ( সম্পূর্ণ )

সকাল থেকেই আমি মজিদ ভাইকে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য খুঁজছি। লোকটির খুব মাছ ধরার নেশা। রাত-দুপুরে এখানে সেখানে মাছ ধরতে যায়। আমি একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম ভাই আপনার ভয় করেনা? সে বত্রিশ দাঁত বের করে বললো ভূতের কথা বলছো। আমিতো ভূত চাবাইয়া খাই। কিছুটা দৃষ্টিকটু তার দাঁতের দিকে আমার নজর পরলো দেখলাম দাঁত থেকে রক্ত বের হচ্ছে। কথার মাঝ খানে ওয়াক থু। থুথুর সাথে কিছুটা রক্তও বের হয়েছে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। আমারও আবার মাছ ধরার খুব সখ। তাই মজিদ ভাইয়ের সাথে আমার প্রচুর খাতির।

শেষ রাতের ট্রেন ( রহস্য রোমাঞ্চ ভৌতিক গল্প )

"এই চা গরম -চা গরম " - চিকন একটা গলায় চিৎকার করে চলেছে মিশকালো একটা লোক- হাতে এক বিশাল চায়ের ফ্লাক্স- চিল্লাতে চিল্লাতে রাজু সাহেবের সামনে মিনিট তিনেক ধরে ঘুর ঘুর করছে। যত বার রাজু সাহেবের সামনে যাচ্ছে ততবার রাজু সাহেব বিরক্ত হচ্ছেন- কিন্তু চা ওয়ালার কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। লাকসামের রেলস্টেশনের ওয়েটিং এ রাজু সাহেব আজ রাত্রের গুটি কয়েক যাত্রির মাঝে একজন। স্যুট বুট পড়া বলে রাজু সাহেবের দিকে বার বার এগিয়ে আসছে একের পর এক হকার।

আজরাইল ( রহস্য- রোমাঞ্চ-ভৌতিক গল্প)

ঘটনার শুরু আজ থেকে চার বছর আগে এক রাতে। আমি সিলেট এর ওসমানী মেডিকেল এ একটা সেমিনার শেষ করে নিজেই ড্রাইভ করে ফিরছিলাম ঢাকায়। সাধারণত আমার পাজেরো টা আমার খুব প্রিয় হওয়াতে আমি কাউকে ড্রাইভার রাখিনি। সেদিন ও আমি নিজেই চালিয়ে নিয়ে আসছিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। পথে খানিক টা ঘুম ঘুম ভাব আসলেও মন টা সতেজ ছিল- কারন সেই সেমিনারে আমি আমার গবেষনার জন্য পেয়েছি প্রচুর হাততালি।

প্রতিশোধ (ছোট গল্প)

ঐ তো দেখা যাচ্ছে লালচে গোলাকার গহবর টা।দুই পাশ থেকে নেমে এসেছে কালচে কেশর। ভেতর থেকে ও নেমে এসেছে একটা- সুক্ষ্ম ও চিকন চিকন কেশর। মাঝ থেকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে ওটা। ঠিক আমার দিকে।আমার আজকে এখানে আসার পেছনে এত কষ্টের মুলে ঐ চলমান পাহাড়টা। ত্রিশ প্রহর আগে এই পাহাড়টা আমার সন্তান কে- আমার প্রাণের টুকরা কে মেরে ফেলেছে। হত্যা করেছে চরম নৃশংস ভাবে। আমি ভাবতে ও পারিনা- এভাবে আমার রক্ত কে ওটা মেরে ফেলতে পারে। আমার সন্তান না হয় খেলতে খেলতে চলমান পাহাড় টার এলাকায় চলে এসেছিল- হয়ত বা ভুল করে চলে এসেছিল ওর ঘুমানোর স্থানে- তাই বলে কি এভাবে চ্যাপ্টা করে পিষে ফেলতে হবে?

কালো যাদু - একখন্ডে সমাপ্ত সম্পূর্ণ পিশাচ কাহিনী

‘সব কাজ সবার দ্বারা সম্ভব না।’, তীব্র আপত্তির সুরে বললেন আহসান সাহেব। আহসান সাহেব তপুর বড় চাচা। রাজশাহী শহরের একজন শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি। রাজশাহী কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি পড়াশুনা করেছেন কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে রীতিমত গবেষণা করেছেন আর সে বিষয়টা হল ব্লাক ম্যাজিক বা কালো যাদু। ব্লাক ম্যাজিকের উপর তিনি প্রচুর পড়াশুনা করেছেন, রাতের পর রাত কাটিয়েছেন শ্মশানঘাট আর কবরস্থানে। এমনকি হাতে কলমে ব্লাক ম্যাজিক শেখার জন্য তিনি বেশ কিছুদিন কাটিয়ে এসেছেন আফ্রিকায়,

সিংহাসন (রহস্য - রোমাঞ্চ গল্প)

আজ আপনাকে এক অদ্ভুত গল্প শোনাবো। যদি ও জানি আপনি এর এক দন্ড ও বিশ্বাস করবেন না। ভাববেন আমি পাগল কিনবা বদ্ধ উন্মাদ। কিনবা মানসিক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা কেউ।কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি আজ যে কথা গুলো বলবো তাতে বিন্দু মাত্র মিথ্যা লুকানো নেই। আমি লেখক হতে পারি, বানিয়ে বানিয়ে প্রচুর গল্প লিখতে পারি - কিন্তু আমি আজ যে জিনিসটা নিয়ে আপনাদের কাছে লিখছি সেটা আমার সামনেই আছে। একটা সামান্য সিংহাসন মাত্র এটা। আমি এটাতে বসেই লিখছি আপনার কাছে। আমি এটা সম্পর্কে যা যা লিখবো সব সত্য লিখবো এটা প্রতিজ্ঞা করেই শুরু করলাম। ঘটনার শুরু যখন আমি মেসে থাকি- ঢাকায় এক অভিজাত এলাকায়।বাবার অনেক টাকা থাকায় আমোদ ফুর্তিতে আমি ছিলাম একেবারেই মত্ত। আমি পড়তাম এক অভিজাত প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে। সারাদিন আড্ডা- নেশা করা- বিভিন্ন যায়গায় হটাত করে চলে যাওয়া ছিল আমার নিত্য দিনের অভ্যাস। আমি কুমিল্লার ধর্ম সাগরে নেশা করে নৈকায় ঘুরেছি- সমুদ্রে চাঁদের আলোর নিচে বসে বসে বন্ধুদের মাঝে বিলিয়েছি ঘুমের মন্ত্র।

ফোঁড়া ( রহস্য- রোমাঞ্চ- ভৌতিক গল্প )

অনেক ক্ষন ধরে সামনে বসা মানুষ টার দিকে তাকিয়ে আছেন ডঃ তাহসিনা। মাথাটা নিচু করে বসেই আছে সেই লোক। অনেকক্ষণ ধরে বসে থেকে থেকে শেষে বলতে শুরু করল-
"আমার যে সমস্যা সেটা হল আমার পেটে একটা ফোঁড়া ঊঠেছে।"
বলেই শুন্য দৃষ্টিতে ডঃ তাহসিনার দিকে তাকিয়ে থাকল। ডঃ তাহসিনা অনেক ভাল একজন সাইকায়াট্রিষ্ট। উনি এর আগে ও অনেক মেন্টাল রুগীকে ভাল করেছেন। কিন্তু আজকের এই রুগি এসে বসেছে তো বসেছে কথা বলার কোন নাম গন্ধ নাই।

জ্বিনদের জানাযায় - একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে ছোট গল্প

হাসান বেগ একজন সরকারী কর্মকর্তা। ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের একজন পরিদর্শক। মাসিক মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে থানা স্বাস্থ্য অফিসে এসেছেন। মিটিং শুরু হতে হতে দুপুর পার হয়ে গেলো। হাসান সাহেব কর্মকর্তাদের আচরণে খুব বিরক্ত। সময় জ্ঞান নেই মনে মনে বিরবির করে বললো। আসলে হাসান সাহেবরই বা কি দোষ। থানা সদর থেকে প্রায় ২১ কি.মি. দূরে হাসান সাহেবের বাড়ি। যদিওবা বাসে সবটা রাস্তা যাওয়া যেতো তাহলও সমস্যা ছিলোনা। কিন্তু ৭ কি.মি. বাসে আর বাকিটা পথ সাইকেলে যেতে হবে।

আস্তিক - একখন্ডে সমাপ্ত সম্পূর্ণ পিশাচ কাহিনী

আমার নাম রহমান। জুয়েল রহমান। পেশায় ডাক্তার। থাকি ঢাকায়। আমি ভূত বিশ্বাস করি না। ভূত কেন আমিতো ঈশ্বরকেও বিশ্বাস করিনা। যে সময় মানুষ চাঁদে যাচ্ছে, মঙ্গলগ্রহ জয় করার প্রস্তুতি নিচ্ছে , সেই যুগে আমি ভূত নামক মানুষ সৃষ্ট একটা ভ্রান্ত ধারণাকে মনে ঠাঁই দিতে পারিনা। আমার বন্ধুরা আমকে নাস্তিক বলে। বলুক। আমার তাতে কিছু যায় আসে না। আমি আমার বিশ্বাসে অটল। কেউ টিটকারি দিয়ে আমকে আমার বিশ্বাস থেকে একটুও নড়াতে পারবেনা। আমি নাস্তিক। একজন নাস্তিক মানুষ।

রক্তখেকো [ ভয়ংকর এক রাক্ষসীর কাহিনী ]

এই মেয়েটা দেখার পরও যখন কালামের পছন্দ হইলোনা। তখন সবাই ধরে নিল এই জীবনে কালামের আর বিয়াই হইবোনা। গ্রামের সবাই কালামকে একটু-আধটু টিপ্পনিও কাটে। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কালাম বিয়ে করে ফেলল। যেমন তেমন মেয়ে নয়, এক অপরুপ সুন্দরী। গ্রামে কালামের বউ নিয়া ব্যাপক আলোচনা। কালামের বউয়ের আবার অনেক গুণ আছে। যেমন শশুর-শাশুরীর যত্ন, ভাল রান্না-বান্না, স্বামী সেবা আরও কত কি? বউ নিয়া কালামের দিন সুখেই কাটছিল।
এরমাঝে একদিন সকালে খবর বের হলো জমিরের ষাড় গরু দুইটির ঘাড়ভাঙ্গা অবস্থায় গোয়াইল ঘরে [গরু রাখার ঘর] পরে আছে। গ্রামের সবলোক জমিরের বাড়িতে হাজির। কেউ কেউ বলতে লাগল ভূত এসে ঘাড় ভেঙ্গে দিয়ে গেছে, কেউবা বলতে লাগল এটা রাক্ষসের ঘটনা। রাক্ষস এসে ঘাড় ভেঙ্গে রক্ত চুষে খেয়েছে। কেউ কেউ ঘটনাটাকে পাত্তা না দিয়ে বলছে ষাড়ে ষাড়ে লড়াই করে মারা গেছে। তাদের যুক্তিও ছিল - দুইটি ষাড়েরই শিং ভাঙ্গা। কিন্তু পরের দিন যখন একই ভাবে ফিরোজ চাচারও গরু মরে গেল। তখন সবার ভিতর একটা অজানা আশংকা সৃষ্টি হইলো।

Monday 13 October 2014

আট কলা বিদ্যা Aat kola bidya

রহিম শেখ বড়ই রাগী মানুষ । কোন কাজে একটু এদিক-ওদিক হইলেই সে তার বউকে ধরিয়া বেধম মারে । রোজ তাদের বাড়িতে মারামারি লাগিয়াই আছে । সেদিনের একটি ঘটনা বলিতেছি ।
বউ সকালে উঠিয়া ঘর-দোর ঝাঁট দিতেছে, রহিম ঘুম হইতে উঠিয়া বলিল ‍‌“ আমার হুঁক্কায় পানি ভরিয়াছ ?” বউ বলিল, “ তুমি তো ঘুমাইতেছিলে. তাই হুঁক্কায় পানি ভরি নাই । এই এখনই ভরিয়া দিতেছি” । রহিম চোখ গরম করিয়া বলিল, “এতো বেলা হইয়াছে, তবু হুক্কায় পানি ভর নাই ! দাঁড়াও দেখাইতেছি তোমায় মজাটা” । এই বলিয়া সে যখন বউকে মারিতে উঠিয়াছে, বউ বলিল, “যখন তখন তুমি আমাকে মার-ধর কর, আমি কিছুই বলি না । জান আমরা মেয়ে জাত ? আটকলা হেকমত আমাদের মনে মনে  । ফের যদি মার তবে  আটকলা হেকমত দেখাইয়া দিব” ।
এই কথা শুনিয়া রহিম শেখের রাগ আরো বাড়িয়া গেল । সেএকটা লাঠি লইয়া বউকে মারিতে মারিতে বলিল, “ওরে শয়তানী, দেখি তোর আটকলা কেমন ? তুই কি ভবিয়াছিস্  আমি তোর আটকলাকে ডরাই ?”

মধ্যরাতে কঙ্কালের সাথে modhyrate konkaler sathe

স্টেশনের লোহার গেটটা এক ধাক্কায় খুলে দৌড় দিলাম টিকিট কাউন্টার এর দিকে । অনেক রাত হয়ে গেছে, ট্রেন পাব কিনা জানিনা । টিকিট কাউন্টারের সামনে যেয়ে হতাশ হতে হল আমকে । বন্ধ । কিন্তু কিছু করার নাই আমার, এইখানে অপেক্ষা করা ছাড়া। একটা টুল দেখে বসে পড়লাম সেখানে । আজকে সকালেই জয়দেবপুর এসেছি একটা ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য । এম.বি.এ পাশ করেছি গতবছর । বহু জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছি । কখনই কোন রিপ্লাই আসেনি ।

Saturday 4 October 2014

বুদ্ধিজীবি অব দ্যা ইয়ার

আকিজ সাহেব তার অফিসের চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ দু’টো বুজে নিজের কথা চিন্তা করছিলেন। চিন্তা করছিলেন আজ তিনি কোথা থেকে কোথায় এসে পৌছেছেন। চিন্তা করতে করতে হঠাৎ আকিজ সাহেব শরীরটা ঝাকি দিয়ে চোখ খোলে সোজা হয়ে বসলেন। এবং মনে মনে ভাবলেন- কি সব বাজে চিন্তা !! এই চিন্তা করার কোন মানে আছে??
আকিজ সাহেব বর্তমানে এই শহরের একজন বিরাট ব্যবসায়ী। অনেক গুলো প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি তবে মজার ব্যপার হলো তিনি যে সকল প্রতিষ্ঠানের মালিক তার অধিকাংশই ইলেকট্রনিক্সের প্রতিষ্ঠান। বিষয়টাকে যদি মজার ব্যপার বলি তাহলে ভুল হবে, বিষয়টা বাস্তব।

দাঁড়াও দাঁড়াও ছুরি লইয়া যাও

হাটে একটি  উঠিয়াছে। এক ফকীর ভাবিল, এই বোয়াল মাছটার পেটি দিয়া যদি চারটি ভাত খাইতে পারিতাম! সে মাছের দোকানের কাছে দাঁড়াইয়া রহিল। একজন চাষী আসিয়া মাছটি কিনিয়া লইল। মুসাফির তাহার পিছে পিছে যাইতে লাগিল। লোকটি যখন বাড়ির ধারে আসিয়াছে তখন মুসাফির তাহার নিকটে যাইয়া বলিল, ‘সাহেব! আমি মুসাফির লোক। ভিক্ষা করিয়া খাই। কোনোদিন ভালো খাওয়া হয় না। আজ হাটে যাইয়া যখন ঐ বড় মাছটি দেখিলাম, মনে বড় ইচ্ছা হইল এই মাছটির পেটি দিয়া যদি চারটি ভাত খাইতে পারিতাম! তাই আপনার পিছে পিছে আসিয়াছি। দয়া করিয়া যদি আমার মনের ইচ্ছা পূরণ করেন বড়ই সুখী হইব।’

Saturday 27 September 2014

আমার চাচাতো ভাই নিপুন

আমার চাচাতো ভাই নিপুনের সাথে আমার সম্পর্ক অন্য সব ভাইবোনদের চেয়ে ভালো।। নিপুনের পরীক্ষা শেষ হলে ও চলে আসতো আমাদের বাসায়।। আমার পরীক্ষা শেষ হলে আমি চলে যেতাম তাদের বাসায়।।

যাই হোক, আপনাদের আজকে একটা কাহিনী বলবো, আমার এবং নিপুনের সম্পর্কে।। যদিও ঘটনাটি আমাদের পুরো পরিবারের সাথেই ঘটেছিলো তবে ভুক্তভোগী ছিলাম আমিই বেশি।।

ডিসেম্বর মাস।। নিপুনের পরীক্ষা শেষ।। আমারও পরীক্ষা শেষ।। তবে নিপুনের ঢাকায় কিছু
কেনাকাটা বাকি ছিল তাই সে এবার ঢাকায় চলে আসে।। বিকেলের বাসে রওনা দেয়, আমাদের বাসায় এসে পৌঁছায় রাত ৯ টার দিকে।।

বাসায় ঢুকেই সে দৌড়ে বাথরুমে চলে যায়।। কাউকে কোনও কথার সুযোগ না দিয়ে।। আমি অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, তার পায়ের ফাঁক দিয়ে রক্ত পড়ছে।। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করলাম না।।

Monday 8 September 2014

গল্পটা একটা রাক্ষসের

অভিজিত স্যার জেনেটিক্স ক্লাস নিচ্ছেন। আমরা চুপ করে তার কথা শুনছি। হঠাৎ আমার চোখ ঘুরে গেল সীমার দিকে। সীমা ইশারায় কিছু একটা বলল। ওর ইশারার অর্থ আমি যা বের করলাম, ‘ক্লাস শেষ হউক, বাইরে আয়, তোর খবর আছে।’ এমন ইশারার কারন বুঝতে আমার বেশিক্ষন লাগল না। গতকাল তন্বীর সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি, তাই হয়তো সীমা ক্ষেপেছে। এটা অবশ্য নতুন কিছু না। তন্বীর প্রত্যেকটা কথা ভেঙানো, বিশ্রিভাবে ওর হাসি নকল করা, এককথায় ওকে বিরক্ত করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। এটা মনে করার কোন কারন নেই তন্বী আমাকে পছন্দ করে। সত্যি বলতে কি, আমার মধ্যে এমন কিছুই নেই যেটা দেখে কেউ আমাকে পছন্দ করতে পারে। উস্কো খুস্কো চুল, মুখ ভরা খোঁচা খোঁচা দাড়ি, পড়াশুনার ব্যাপারে ভীষণ উদাসীন, তাছাড়া সমস্ত চেহারায় আমার গুন্ডা গুন্ডা ভাব।

Sunday 7 September 2014

তাহলে আমাদের পৌছে দিলো কে

একটা ছোট ঘটনা শেয়ার করেছেন Muntacir Ahamed । সবাই পড়তে পারেন, কিন্তু উল্টাপাল্টা কমেন্ট করবেন না দয়া করে ।
সেদিন বিকালে পশ্চিম পাড়ায় ম্যাচ ছিলো বলে আমার আর অভির ফিরতে দেরি গেলো।আমরা থাকি উত্তর পাড়ায় ।সাধারণত পশ্চিম পাড়া থেকে আমাদের উত্তর পাড়ায় হেটে আসতে প্রায় আধ ঘন্টা লাগে।

Saturday 6 September 2014

রাক্ষস এক বাজ পাখির গল্প

হঠাৎ করেই বনের পাখিদের মধ্যে হুলস্থুল শুরু হয়ে গেলো। একটি বাজপাখি এই গন্ডগোলের কারণ। এটি যেন পাখি নয়, যেন রাক্ষস! সারাদিন শুধু খাই খাই। হাঁস খাবে, মুরগি খাবে, চড়ুই খাবে, টিয়া খাবে- খেতে বাজ পাখিটির কোন ক্লান্তি নেই।  কিছুতেই পেট ভরে না ওর।
বাজপাখিটির সকালের নাস্তায় ছোট-বড় মিলে দশ থেকে বারোটি পাখি লাগে। দুপুরের খাবারের জন্য পনের থেকে বিশটি, আর রাতে এর কম হলে চলে না। এ ছাড়াও সারাদিন সময়-সুযোগ পেলেই টিয়া, ময়না, চড়ুই, টুনটুনি আর বুলবুলি মিলে আট থেকে দশটি পাখি শিকার না করলে মনে হয় সারাদিন কিছুই খায়নি ও।
এভাবে প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশটি পাখি বাজপাখিটির পেটে যায়। এতে বন থেকে পাখির সংখ্যা দ্রুত কমে যেতে লাগলো।

Friday 5 September 2014

কাদের সাপ

গোপাল মাঝে মাঝে কারও না কারোর সঙ্গে নিজের বাড়ির দাওয়ায় বসে দাবা খেলতো। গোপালের সঙ্গে দাবা খেলার জ্ন্য প্রায়ই কেউ না কেউ দুই মাইল দূর থেকেও হেটে আসতেন।
 অন্ততঃ এক বাজি খেলতে না পারলে অথবা কারও সঙ্গে দাবায় হেরে গেলে গোপাল সে রাতে মোটেই ঘুমাতে পারতো না। সারারাত বিছানায় শুয়ে শুয়ে শুধু ছটফট করত।
দাবা খেলায় ভীষণ নেশা গোপালের বলতে গেলে, দাবা খেলার সময় গোপাল বাহ্যজ্ঞানই হারিয়ে ফেলত। একদিন গোপাল দাবা খেলছিল, আর এক চাল দিলেই কিস্তিমাত হয় আর কি?

Thursday 4 September 2014

কীর্তনখোলার গল্প

একটি সত্য ঘটনা। ভুত/প্রেত/জীন বিশ্বাস না করলে পড়বেন না কেউ।

আমার বাড়ি বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পাশেই। ছোটবেলা থেকে গ্রামে গঞ্জে থেকে মানুষ আমি ভূতের ভয় নেই বললেই চলে । অনেকের মুখে শুনেছি সন্ধ্যার পর কীর্তনখোলার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকি অশরীরীর দেখা পাওয়া যায়। আমি কখনো এসব বিশ্বাস করতাম না। সেবার মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম একটা কাজে। এক পরিচিত চাচার মোটর নৌকায় গিয়েছিলাম। বাসায় ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। চাচার গঞ্জে কাজ ছিলো দেখে আমাকে বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে নামিয়ে দেয়। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সমস্যা হবে নাকি।

Wednesday 3 September 2014

এক দাঁতের রাক্ষসের গল্প

রাক্ষস রাজ্যে আজ খুশির বন্যা বইছে। রাজ্যজুড়ে হুম, হাম, দুম, দাম শব্দ হচ্ছে। রাক্ষসরাজা মন্ত্রীকে ডাকলেন – মন্ত্রী?
- জি হুজুর।
- শব্দ এতো কম হচ্ছে কেন? শব্দ বাড়াতে হবে। তুমি শব্দের ব্যবস্থা করো।
- জি হুজুর। আমি এখনই যাচ্ছি। পুরো রাজ্য এবার টের পাবে, শব্দ কাকে বলে!
- ৬০০ বছর পর আমার একটা পুত্র হয়েছে, এটা কি আনন্দের সংবাদ নয়?

Tuesday 2 September 2014

এমন অসভ্য বাঁদর দেখেনি

গোপাল একবার বরযাত্রী হয়ে বিয়ে বাড়ীতে গিয়েছিল। কনে পক্ষের একজন বয়ষ্ক রসিক ব্যক্তি গোপালের সঙ্গে রসিকতা করার উদ্দেশ্যে বললে, এই যে গোপাল তুমিও দেখছি বরযাত্রী হয়ে এসেছ
। জানো তো ‍আমাদের এখানে অনেক বাদর আছে। এখানে বাদরের অত্যাচার ভীষণ।
অবশ্য তোমার চেহারও বাদরের মত। বাদরদের মধ্যিখানে তোমাকে মানাবে ভাল কি বলো?
বাদর যদি কেউ ইতিপূর্বে না দেখে থাকে- এ যাত্রায় বাদর দেখাও হয়ে যাবে আর

Monday 1 September 2014

সেই ব্যাপারে কেউ আজ পর্যন্ত জানতে পারে নি

ঘটনাটি আমার কাকার মুখ থেকে শোনা। আমার কাকার গ্রামের বাজারে একটা মুদি দোকান আছে। সেখানে হাটের দিন অনেক রাত পর্যন্ত বেচা কেনা হয়। কাকা মাঝে মাঝে আসতে আসতে নাকি রাত ১-২ টাও বেজে যেত। কাকার দোকানে সেলিম নামের এক কর্মচারী কাজ
করতো। সে কথা বলতে পারতো না। মানে, বোবা ছিল। কাকা তাকে খুবই আদর যত্ন করতো। সেলিমের তিনকুলে কেউ নেই। সে তার দুঃসম্পর্কের এক মামার বাড়িতে থাকতো। সেই লোক মারা যাওয়ার পর না খেয়ে ছিল। কাকার দয়া হয়। নিজের দোকানে তাকে কাজ দেন।

Sunday 31 August 2014

একটি ব্যাখ্যাতিত ঘটনা

অবশেষে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে তীব্র যানজট পেরিয়ে যখন বারাদী বাজার (মেহেরপুর) এসে নামলাম তখন রাত ১.৫০ মিনিট। অন্ধকার তেন ছিলো না, মৃদু চাঁদের আলোয় ঝিঁঝি পোকারা ডাকছিলো। বাজারে একটা দোকানও খোলা নেই। আমি খুব ধীরে ধীরে ট্রাভেল ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। এই মুহূর্তে আমি চূড়ান্ত রকম নিঃসঙ্গ। মোবাইলটা তিনবার 'লো-ব্যাটারি' সিগন্যাল দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল।

Thursday 28 August 2014

জ্ঞানী নাস্তিক মামা

জনৈক জ্ঞানী নাস্তিক মামা একদা ভ্রমন করিবার জন্য বিমানে উঠিলেন। তিনি লক্ষ করিয়া দেখিতে পাইলেন তাঁহার পাশের সিটে বসিয়া এক রুপবতী বালিকা মনোযোগ দিয়া বই পড়িতেছে। নাস্তিক মামা যার পর নাই আনন্দিত হইলেন। এই বালিকার সহিত গল্প করিয়া ভ্রমনের সময়টুকু কতটা আনন্দদায়ক হইবে তাহা ভাবিয়া তিনি পুলকিত হইলেন।
নাস্তিক মামা গলা খাকরি দিয়া বালিকাটিকে বলিলেন, "তুমি কি আকাশ ভ্রমনের সময়টুকু গল্প করিয়া কাটাইতে চাও? ইহাতে সময় দ্রুত কাটিয়া যাইবে।"
বালিকা সন্দেহের চোখে তাকাইয়া উত্তর দিল, "আপনি কি বিষয়ে গল্প করিতে চান?"

Wednesday 27 August 2014

গুলের রাজা


একটি চা-এর দোকানে বসে কিছু অলস লোক আড্ডা মারতেছে। এক জন অন্য জনকে গুল মারে (অর্থাৎ মিথ্যা বলে) , বসে থাকা বাকি লোক জন শুনে। দোকান দারের কোন সমস্যা নাই বরং লাভ, দুই একটা চা বিক্রি করতে পারবে। এতো প্যাঁচাল করে সময় নষ্ট করে লাভ কি আসল কথাই আসি।
প্রথম জন বলেঃ আমার দাদার একটা কুত্তা (কুকুর) ছিল। মানুষের মত কথা বলতো আর গরুর মত ঘাস খেত!!!!!
দ্বিতীয় জনে বলেঃ আরে রাখ। তোর দাদার কুত্তার ছেয়ে আমার নানার বিড়াল ছিল বড় ডিয়ারিং।